এই ডিসেম্বরে ঘটবে তিনটি মহাজাগতিক ঘটনা, দেখা যাবে খালি চোখেই

Advertisement
সাধারণত ধূমকেতুর ফেলে যাওয়া ‘মেটিরিয়াল’ পৃথিবীর চলার পথে অবস্থান করলে পৃথিবী পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই অভিকর্ষের টানে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসতে চায়। এই ‘মেটিরিয়াল’গুলি তুলনামূলক অনেক ছোটো হয়ে থাকে। তখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে জ্বলে ওঠে আর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জ্বলে ওঠার সেই দৃশ্যকেই ‘উল্কাপাত’ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বরে ঘটতে চলা উল্কাবৃষ্টি কোনও ধূমকেতুর অংশ নয়। এটি একটি গ্রহাণুর ফেলে যাওয়া ধূলিকণা মাত্র।

এই ডিসেম্বরে ঘটবে তিনটি মহাজাগতিক ঘটনা, দেখা যাবে খালি চোখেই
Symbolic image – Image by Iaocaohenmang from Pixabay

রঞ্জন সরকার : প্রতি নিয়তই ঘটে চলেছে বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনা। যার কোনওটি মানুষের খালি চোখে ধরা পড়ে, কোনওটি বা পড়ে না। প্রয়োজন হয় শক্তিশালী টেলিস্কোপের। শুধু টেলিস্কোপ থাকলেই চলবে না, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই ডিসেম্বরেই ঘটতে চলে এমন তিনটি মহাজাগতিক ঘটনা, যা চাক্ষুষ করতে প্রয়োজন হবে না কোনও টেলিস্কোপের। খালি চোখেই সেই ঘটনাগুলির সাক্ষী থাকা যাবে।

উল্কাপাত : উল্কাপাত প্রায় সারা বছর ধরেই ঘটে। তবে তুলনামূলক অনেক কম সংখ্যায়। ভাগ্য ভালো থাকলে তার দু-একটি নিশ্চয় দেখতে পাওয়া যায়। আর উল্কা দর্শনে যে কী নিদারুণ আনন্দ হয়, তা কেবলমাত্র সেই দর্শনার্থীই বলতে পারেন। তবে এবার ওই আনন্দের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে সাম্প্রতিককালের ‘উল্কা বৃষ্টি’। কারণ আগামী ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর ঘটতে চলেছে এই মহাজাগতিক ঘটনা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জেমিনিডস’ উল্কা বৃষ্টি।

সাধারণত ধূমকেতুর ফেলে যাওয়া ‘মেটিরিয়াল’ পৃথিবীর চলার পথে অবস্থান করলে পৃথিবী পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই অভিকর্ষের টানে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসতে চায়। এই ‘মেটিরিয়াল’গুলি তুলনামূলক অনেক ছোটো হয়ে থাকে। তখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে জ্বলে ওঠে আর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জ্বলে ওঠার সেই দৃশ্যকেই ‘উল্কাপাত’ বলা হয়ে থাকে।

কিন্তু ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বরে ঘটতে চলা উল্কাবৃষ্টি কোনও ধূমকেতুর অংশ নয়। এটি একটি গ্রহাণুর ফেলে যাওয়া ধূলিকণা মাত্র। এব্যাপারে ইংল্যান্ডের গ্রিনিচ মানমন্দিরের রয়্যাল অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী প্যাট্রিশিয়া স্কেলটন জানাচ্ছেন, ‘জেমিনিডস’ উল্কাবৃষ্টি আসলে ৩২০০-ফিটন নামের একটি গ্রহাণুর রেখে যাওয়া ধূলিকণা। পৃথিবীর বাতাসে প্রবেশের পর সেগুলি জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। এই দৃশ্যই মূলত উল্কাবৃষ্টির আকার নেবে।

এবারের উল্কাবৃষ্টিতে ঘণ্টায় প্রায় ১৫০টির মতো উল্কা দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। পৃথিবীর অভিকর্ষের টানে ছুটে আসার সময় এর গতি থাকবে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড। এই মুহূর্তে রাতের আকাশে চাঁদ থাকায় উল্কা দেখার সৌভাগ্য কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূর্যের পূর্ণ গ্রহণ : এই মহাজাগতিক ঘটনাটি ঘটতে চলেছে আগামী ১৪ ডিসেম্বর। এদিন ‘প্রাণকর্তা’ অর্থাৎ সূর্য সম্পূর্ণভাবে ঢাকা পড়ে যাবে চাঁদের শরীরে। তবে এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে পারবেন শুধুমাত্র দক্ষিণ আমেরিকার দুই রাষ্ট্র চিলি ও আর্জেন্টিনার বাসিন্দারা। এদিন সূর্য চাঁদ দ্বারা সম্পূর্ণ ঢাকা থাকবে প্রায় ২ মিনিট ৯.৬ সেকেন্ডের জন্য। এমনিতেই বছরে বেশ কয়েকবার (প্রায় ৫ বার পর্যন্ত) সূর্যগ্রহণ ঘটে থাকে। তবে এই রকম পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটে ১৮ মাস অন্তর।

বৃহস্পতি-শনির একত্র অবস্থান : আগামী ১৬ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সৌরজগতের দুই সর্ববৃহৎ গ্রহ বৃহস্পতি ও শনিকে একসঙ্গে এবং একই আকাশে দেখতে পাওয়া যাবে। কারণ এই সময় তাদের মধ্যে দূরত্ব হবে সবচেয়ে কম। তারা সবচেয়ে কাছে থাকবে ২১ ডিসেম্বর। এমনটি ঘটতে চলেছে প্রায় ৮০০ বছর পর। আর এই দৃশ্য সম্পূর্ণ খালি চোখেই পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই দেখতে পাওয়া যাবে। দেখার জন্যে শুধু চোখ রাখতে হবে সূর্য ডোবার ঠিক পর পশ্চিম আকাশে। হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে ওই দুই গ্রহ যেন একে ওপরের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হতে চলেছে।

Advertisement
Previous articleজেলা শাসকের কাছে ‘সুস্থ বসার পরিবেশ’-এর জন্য আবেদন করল সিউড়িবাসী
Next articleউঠে গিয়েছে হাট, তবু আজও হাটতলায় একাই দোকান সাজান শঙ্করী দেবী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here