Advertisement
অনলাইন পেপার : গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সাল ছিল সর্বকালের ৩টি উষ্ণতম বছরের একটি। আবার জাতিসংঘের বিচারে ২০১৯ ছিল এই দশকের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। ওই বছরের শেষে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বেশ উদ্বেগের সাথেই জানিয়েছিল, শুধুমাত্র গত বছরেই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি। যা আপাতভাবে স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি।
আবহাওয়া সংস্থা এবছর অর্থাৎ ২০২০–কে নিয়ে আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। সংস্থার মতানুযায়ী, চলতি বছর ছাড়িয়ে যেতে পারে গত বছরের রেকর্ড-কেও। আর এমনটি হলে নিয়মিত ঘটতে থাকবে আবহাওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যদিও বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রতিধ্বনি। আবহাওয়াবিদদের মতে, আগে সারা বছরে যেখানে একটি বা দু’টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে দেখা যেত, এখন সেখানে প্রায় সারা বছর ধরেই একাধিকবার হয়ে চলেছে। আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন।
বিশ্ব জুড়ে এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্যে বিশেষজ্ঞরা মানুষকেই দায়ী করছেন। অবৈজ্ঞানিকভাবে শিল্পাঞ্চলের পরিধি বাড়ানো সবচেয়ে বড়ো কারণ বলে তাঁদের ধারণা। এর ফলে পরিবেশের বাতাসে প্রতি বছরই অতিরিক্ত কার্বন যুক্ত হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে তাঁরা যুক্ত করছেন নিয়মের তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত বৃক্ষচ্ছেদন, মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধিকেও। এছাড়াও তাঁরা তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম বড়ো কারণ হিসাবে তুলে ধরছেন সমুদ্রের জলের অম্লতা বৃদ্ধিকে। পূর্বে পৃথিবীর অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রায় ৯০ শতাংশ সমুদ্রের জল শুষে নিতে পারলেও, এখন সেই শুষে নেওয়ার ক্ষমতা চার ভাগের এক ভাগ মাত্র।
বিশেষজ্ঞরা সতর্কও করে দিয়েছেন বিশ্বকে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই গড় হার ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকলে বিপর্যয়ের আর শেষ থাকবে না বিশ্বাসীর কাছে। বারবার ঘটতে থাকবে বিভিন্ন আবহাওয়াজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তাতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। জাতিসংঘের হিসাবে গত বছর শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের (ঝড়, অতিবৃষ্টি, খড়া, বন্যা) কারণেই বাস্তুচূত হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।
বিশ্ব জুড়ে উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে দুই মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে থাকবে দ্রুত গতিতে। ফলে সামুদ্রিক জলস্তর বেড়ে যাবে। গত বছরে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ হিসাবে তুলে আনা যেতে পারে, গ্রিনল্যান্ডে একদিনে ১৮১৪.৩৭ টন বরফ গলে যাওয়াকে। সেই সঙ্গে নষ্ট হতে থাকবে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রও। খাদ্যাভাব দেখা দিয়ে সেখানে বসবাসকারী বন্য পশুদের জীবনযাত্রায়ও নেমে আসবে বড়ো–সড়ো বিপর্যয়। কয়েকদিন আগেই এই রকমই একটি রিপোর্টে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছিল বিশ্ব জুড়ে। সেখানে দেখা গিয়েছিল খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে শ্বেত ভাল্লুক তার নিজের বাচ্চাকেই খেয়ে ফেলছে। ঘটনাটি ছিল খুবই হতাশাজনক।
Advertisement