আসন্ন দুর্গোৎসব উপলক্ষে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করল পাহাড়পুরের নাট্য ভারতী

Advertisement
বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব দুর্গোৎসব প্রায় দ্বার প্রান্তে। আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাদেই মায়ের দর্শন পেতে মন্দিরে মন্দিরে ভ্রমণ করবেন দর্শনার্থীরা। এই উৎসবে সামিল হওয়ার অধিকার রয়েছে সমাজের প্রত্যেকেরই। কিন্তু বৈষম্য যেন এখানেও প্রকট। ধনীরা পুজোর দিনগুলিতে নামী-দামি পোশাক পরে আনন্দ উপভোগ করেন। আর দরিদ্রেরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েই মাকে প্রণাম করেন সাদামাটা পোশাক গায়ে। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি

দুর্গোৎসব উপলক্ষে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করল পাহাড়পুরের নাট্য ভারতী
আসন্ন দুর্গোৎসব উপলক্ষে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করল পাহাড়পুরের নাট্য ভারতী 2

জনদর্পণ ডেস্ক : বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব দুর্গা পুজোয় সামিল হওয়ার অধিকার রয়েছে সমাজের প্রত্যেকেরই। এখানে ধনী-দরিদ্রের বিভেদ খাটে না একেবারেই। তবু বৈষম্য লক্ষ্য করা যায় স্পষ্টভাবে। একদিকে ধনীরা পুজোর দিনগুলিতে গায়ে নামী-দামি পোশাক চড়িয়ে, উন্নতমানের খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আনন্দে বিহ্বল হয়ে থাকেন। অন্যদিকে তাঁদেরই সামনে দাঁড়িয়ে দরিদ্রেরা মা দুর্গাকে প্রণাম সারেন সাদামাটা পোশাক গায়ে, আধপেটা খেয়ে। এ যেন এক অবাক সৃষ্টি প্রকৃতির! একই মন্দিরে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একই মাকে প্রণাম করছেন ভিন্ন দুই শ্রেণীর মানুষ।

এবছর করোনা সংক্রমণের কারণে এই বৈষম্য যেন আরও প্রকট হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ কাজহারাদের ঘরে খাদ্যের দানাটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। অনেক পরিবার এখনও রেশনের উপরেই নির্ভর করে রয়েছে অনেকাংশে। সরকারি রেশন ব্যবস্থায় খাদ্যের চাহিদা কিছুটা মিটলেও নগদ অর্থের চাহিদা মিটছে কোথায়! আর অর্থ না জুটলে পুজোর নতুন পোশাক কিনবে কিভাবে?

ঠিক এই অবস্থায় ব্যাপাটির গুরুত্ব বুঝতে মোটেও দেরি করেনি বীরভূম জেলার পাহাড়পুর গ্রামের নাট্য ভারতী। তারা অতি শীঘ্রই সমাজের কিছু সহৃদয় সমাজসেবী মানুষের কাছ থেকে নতুন পোশাক (শাড়ি, ধুতি, প্যান্ট, গেঞ্জি, ফ্রক) ও নগদ অর্থ সংগ্রহ করে দুঃস্থদের পাশে এসে দাঁড়াল। ৫ অক্টোবর নাট্য ভারতী পাহাড়পুর গ্রামের মনসা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে সেই সংগৃহীত পোশাক ও অর্থ বিতরণ করল এলাকার কিছু দুঃস্থ পরিবার এবং বীরভূম জেলার লোকনাট্য ও যাত্রাপালার কয়েকজন দুঃস্থ অভিনেত্রীর মধ্যে।

এদিনের কর্মযজ্ঞে উপস্থিত ছিলেন নাট্য ভারতীর সদস্য সোমেশ ঠাকুর, কৃষ্ণময় মুখোপাধ্যায়, তমালকৃষ্ণ মহান্ত, সুকুমার মিশ্র, সুনীল দাস, জয়দেব দেবাংশী প্রমুখ। এছাড়াও তাঁদের সঙ্গে যোগদান করেছেন কবি সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায়, শিক্ষক রাজকুমার দে, জননী রাইস মিলের কর্ণধার চিত্তপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়, অসীম সাহা প্রমুখ।

এদিন দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হয় ৩৪টি শাড়ি, ৬টি ধুতি, ২৬টি চুরিদার ও ফ্রক, ১৮টি গেঞ্জি, ১৬টি প্যান্টের ছিট। মোট ১২৮ জনকে এদিন পোশাক ও অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।

বীরভূম জেলার লোকনাট্য ও যাত্রাপালা শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুমকুম বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌসুমি সিংহ, জ্যোৎস্না সরখেল, সোনালী মণ্ডল, মিনা মণ্ডল, জবা ভট্টাচার্য, কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায়, চন্দনা দাস, শিপ্রা মণ্ডল প্রমুখ। অভিনেত্রীরা প্রত্যেকেই করোনা সংক্রমণের এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মধ্যে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নাট্য ভারতীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

নাট্য ভারতীর সদস্য জয়দেব দেবাংশী জানালেন, তাঁদের সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব পোশাক ও অর্থ বিতরণ করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা চাইছেন বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব আসন্ন দুর্গোৎসবে সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষ সমানভাবে অংশগ্রহণ করুক।

Advertisement
Previous articleহারিয়ে যেতে পারে প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্ভিদ প্রজাতি, আশঙ্কা গবেষকদের
Next article‘ব্লু মুন’ মোটেও নীল রঙের চাঁদ নয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here