Advertisement
ঈপ্সিতা মুখোপাধ্যায় : সম্প্রতি চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি দৈত্যাকার ব্ল্যাকহোলের সন্ধান পেয়েছেন। ব্ল্যাকহোলটি আমাদের সূর্যের চেয়ে প্রায় ৭০ গুন বড়ো এবং এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫০০০ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। চীনের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি এটির নামকরণ করেছে এলবি-ওয়ান।
![]() |
শিল্পীর কল্পনায় ব্ল্যাকহোল |
প্রচলিত ধারণা অনুসারে মনে করা হয় ১০০ মিলিয়ন স্ট্রেলার ব্ল্যাকহোল রয়েছে আমাদের ব্রহ্মাণ্ডের ছায়াপথের মধ্যে। যাদের সৃষ্টি হয়েছে বৃহৎ তারাদের মৃত্যুর ফলে। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মনে করেন আমাদের গ্যালাক্সিতে যেসব ব্ল্যাকহোলগুলি রয়েছে সেগুলি আমাদের সূর্যের চেয়ে কুড়ি গুন বড়ো। কিন্তু নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত এই ব্ল্যাক হোলটি ব্যতিক্রমী এবং বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিতে চলেছে। বিজ্ঞানী লিউ জিফিং মনে করেন এই ধরণের দৈত্যাকার বিরল ব্ল্যাকহোল তৈরির পিছনে কী কারণ আছে তা আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।
যেহেতু ব্ল্যাকহোল থেকে কোনও আলো প্রতিফলিত হয় না, তাই ব্ল্যাকহোলকে চিহ্নিত করা খুব কঠিন। নব আবিস্কৃত এই ব্ল্যাকহোলটি থেকে বেরিয়ে আসা অত্যন্ত শক্তিশালী এক্স–রে রশ্মিকে পৃথিবী থেকে পরিমাপ করা সম্ভব হয়েছে। যার দ্বারা ব্ল্যাকহোলটির অবস্থান এবং ভরকে সুনির্দিষ্টভাবে পরিমাপ করা সম্ভব হয়েছে। বাস্তবিক সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্ল্যাকহোলটির দৈত্যাকার চরিত্রের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে।
![]() |
পৃথিবী থেকে তোলা প্রথম ব্ল্যাকহোলের ছবি |
লিউয়ের নেতৃত্বে একদল আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী একটি বৃহৎ এলাকা জুড়ে আকাশ পর্যবেক্ষণের মাল্টি অবজেক্ট ফাইবার স্পেক্ট্রস্কোপিক টেলিস্কোপের (LAMOST) মাধ্যমে ব্ল্যাকহোলটিকে পর্যবেক্ষণ করে চলেছেন। এই টেলিস্কোপটি গ্রহ–নক্ষত্রগুলি পর্যবেক্ষণ এবং তার গ্রাভিটি ও ভরের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি।
শক্তিশালী এই টেলিস্কোপটির সাহায্যে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা রীতিমতো চিত্তাকর্ষক। দেখা যাচ্ছে একটি নক্ষত্র যা আমাদের সূর্যের চাইতে আটগুন ভারী, সেই নক্ষত্রটি ওই ৭০ গুন ভারী ব্ল্যাকহোলটিকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে ৭৯ দিনে। নক্ষত্রটির পরিনতি জানার জন্য আমাদের হয়তো বহু যুগ অপেক্ষা করতে হতে পারে। বাস্তবিক এই দৈত্যাকৃতি ব্ল্যাকহোলটি আবিস্কৃত হওয়ায় ব্ল্যাকহোল সম্পর্কিত এতদিনের প্রচলিত ধ্যান–ধারণায় অনেক পরিবর্তন আসবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা।
Advertisement