যেহেতু পশ্চিমী ঝঞ্ঝা পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করছে। তাই পশ্চিমের জেলাগুলিতে আগে বৃষ্টি শুরুর সম্ভাবনা থাকছে। এই বৃষ্টি শুরু হতে পারে আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে। ১১ জানুয়ারি পশ্চিমের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা হয়েছে। ১২ জানুয়ারি থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকবে। উত্তর ও দক্ষিণ দুই বঙ্গ জুড়েই চলতে থাকবে বৃষ্টি। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে শিলাবৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনাও থাকবে।

জনদর্পণ ডেস্ক : শীত প্রেমীদের হৃদয় বিদীর্ণ করে আবারও ‘ভিলেন’ সেজে বাংলার দ্বারপ্রান্তে হাজির হয়েছে ‘পশ্চিমী ঝঞ্ঝা’। ৯ জানুয়ারি থেকে তার ফলেই আকাশে জমতে শুরু করেছে বিক্ষিপ্ত মেঘ। দিনের বেশিরভাগ সময়ই তাই সূর্য অদৃশ্য হয়ে থাকছে সেই মেঘের আড়ালে। অবশ্য তারও আগে থেকেই পরিবেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বাড়তে শুরু করেছে। উধাও হয়েছে শীতের প্রকৃত আমেজ।
সবে পৌষের শেষ। কয়েকদিন পরই মাঘের আগমন ঘটবে বাংলায়। আর তার আগেই শীতের এমন পরিণতি? মানতে না চাইলেও প্রকৃত ঘটনা এমনটিই ঘটে চলেছে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এর সঙ্গেই কি শীতের বিদায় ঘটতে চলেছে এবছরের মতো? যদিও আবহাওয়া দফতর এখনই স্পষ্ট করে কিছু জানাতে চাইছে না।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে আপাতত শীতের তিব্রতা কমেছে বাংলায়। পরিবেশের স্বাভাবিক তাপমাত্রাও ২ থেকে ৩ ডিগ্রী বেড়ে গিয়েছে। বাতাসে ধীরে ধীরে সঞ্চয় হচ্ছে জলীয় বাস্প। ফলে বৃষ্টিরও পরিবেশ তৈরি হয়েছে সমগ্র বাংলা জুড়ে।
আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, যেহেতু পশ্চিমী ঝঞ্ঝা পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করছে। তাই পশ্চিমের জেলাগুলিতে আগে বৃষ্টি শুরুর সম্ভাবনা থাকছে। এই বৃষ্টি শুরু হতে পারে আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে। ১১ জানুয়ারি পশ্চিমের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা হয়েছে। ১২ জানুয়ারি থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকবে। উত্তর ও দক্ষিণ দুই বঙ্গ জুড়েই চলতে থাকবে বৃষ্টি। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে শিলাবৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনাও থাকবে। সমগ্র বঙ্গ জুড়ে আগামী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
এর আগে পৌষের শুরুতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি করেছিল পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। কি এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা? আসলে শীতের মরশুমে ভারতের উপর অবস্থান করা সক্রিয় বায়ুচাপ বলয় অনেকটা দক্ষিণে সরে যায়। তাই উত্তর-পশ্চিম ভারতের বেশ কিছুটা অংশ দখল করে পশ্চিমাবায়ু। ফলে ভূমধ্যসাগরীয় জলীয় বাস্পপূর্ণ ভারি অথচ শীতল বায়ুর প্রবেশ পথ প্রশস্ত হয়ে ওঠে। ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশ দিয়ে প্রবেশের পর তা ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণাবর্ত ও পরে নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। এই নিম্নচাপ ক্রমশ পূর্ব দিকে সরে আসতে চায়। এবং সরতে সরতে পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার হয়ে বাংলায় প্রবেশ করে। সেই সঙ্গে শীতের পথ রুদ্ধ করে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত ঘটায় সমগ্র বাংলা জুড়ে।
পৌষের শুরুর পর পৌষের শেষেও পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আঘাত হানতে চলেছে বাংলায়। ইতিমধ্যে বেড়েও গিয়েছে পরিবেশের স্বাভাবিক তাপমাত্রা। তাই অনেকেই একে শীতের বিদায় বলেই ধারণা করতে শুরু করেছেন। যদিও তেমন কোনও পূর্বাভাস এখনও দেয়নি আবহাওয়া দফতর। অনেক আবহাওয়া-বিদ আবার দাবি করছেন, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দাপট শেষ হলে বাংলায় পুনরায় শীতের দাপট বাড়বে। তবে বারংবার শীতের পথে বাধা পড়ায় এবছর শীত ক্ষণস্থায়ীও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেক আবহাওয়া-বিদ।