কুরাহ কোবোকান নদীর অববাহিকার বাসিন্দাদের সম্ভাব্য ‘ঠান্ডা লাভা’ কাদাপ্রবাহের দিকে নজর রাখার জন্য বলা হয়েছে, যা আগ্নেয়গিরির উপাদানের সাথে মিলিত হয়ে তীব্র বৃষ্টিপাতের কারণ হতে পারে। স্থানীয় সময় বিকাল প্রায় ৫টা ২৪ (10:24 GMT) মিনিটে মাউন্ট সেমেরুতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকার্য ব্যাহত হচ্ছে।

সোমনাথ মুখোপাধ্যায় : ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট সেমেরুতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। অঞ্চলটি সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ জাভা দ্বীপে অবস্থিত। আকাশের আনুমানিক ৫.৬ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত ছাইয়ে ঢেকে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও স্থানীয় মানুষজনকে স্থানান্তরিত করার প্রচেষ্টা শুরু হয়নি। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবরও নেই।
ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সি (এনডিএমএ) ওই পাহাড়ের ঢালে বসবাসকারী গ্রামবাসীদের জেগে ওঠা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের বিষয়ে সতর্ক করেছে। সংস্থার প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ১২,০৬০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আগ্নেয়গিরির ছাই বাড়িঘর ছাপিয়ে ওপরে উঠছে৷ স্থানীয় কর্মকর্তা থরিকুল হক বলেছেন, সাম্বার মুজুর এবং কুরাহ কোবোয়ান নামক গ্রামগুলির (লুমাজাং পৌরসভার অন্তর্গত) দিকে গরম মেঘের কুণ্ডলী ক্রমশ ছেয়ে যাচ্ছে।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কুরাহ কোবোকান নদীর অববাহিকার বাসিন্দাদের সম্ভাব্য ‘ঠান্ডা লাভা’ কাদাপ্রবাহের দিকে নজর রাখার জন্য বলা হয়েছে, যা আগ্নেয়গিরির উপাদানের সাথে মিলিত হয়ে তীব্র বৃষ্টিপাতের কারণ হতে পারে। স্থানীয় সময় বিকাল প্রায় ৫টা ২৪ (10:24 GMT) মিনিটে মাউন্ট সেমেরুতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকার্য ব্যাহত হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অফ ফায়ার’ (আগ্নেয় মেখলা) এর মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে টেকটোনিক প্লেটগুলির সংঘর্ষের ফলে ঘন ঘন আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ও ভূমিকম্প শুরু হয়ে যায়। সক্রিয় রিং অফ ফায়ার অঞ্চলে এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। প্রত্যেকবারই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের পর হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হন।
সেমেরু ‘দ্য গ্রেট মাউন্টেন’ নামেও পরিচিত এবং জাভার অন্যতম সক্রিয় সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি। এটি ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হাইকিং অঞ্চলে অবস্থিত। আগ্নেয়গিরিটি থেকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে শেষ বারের মতো অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। তখন প্রায় ৫৫০ জনকে নিরাপদ অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হয়।
গত এক সপ্তাহের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া একাধিক ভূমিধস সহ্য করেছে। সুলাওয়েসি দ্বীপে একটি মারাত্মক ভূমিকম্প হয়েছে এবং ৬২ জন আরোহী সহ শ্রীবিজয়া এয়ার লাইন্সের একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷