আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ভারত বায়োটেক-এর ‘কো-ভ্যাকসিন’-এর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল গত জুলাই মাসে। সেই ট্রায়াল সম্পূর্ণ রূপে সফলও হয়। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৫টি রাজ্যের ১ লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করবে। ওই ৫টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রাখবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারিতেই বাজারে আসতে পারে ‘কো-ভ্যাকসিন’। – ছবি : সংগৃহীত |
জনদর্পণ ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতি যেন কোনওভাবেই আয়ত্তে আসছে না দেশ জুড়ে। প্রায় প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সমগ্র দেশ জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। পিছিয়ে নেই মৃতের সংখ্যাও। ৬১ হাজার অতিক্রম করে ফেলেছে করোনায় মৃতের সংখ্যা। যদিও সুস্থের হার বেশ অনেকটাই বেশি এই দেশে। এই মুহূর্তে ২৫ লাখেরও বেশি ভারতীয় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতিও প্রায় অবনতির দিকে। ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তবে সুস্থের হার অনেকটাই বেশি এই রাজ্যে, ১ লাখ ২১ হাজারেরও বেশি।
সবকিছু বিশ্লেষণ করেই অনেক করোনা বিশেষজ্ঞ ধারণা দিয়েছিলেন, সাধারণভাবে করোনাকে নির্মূল করা এই মুহূর্তে প্রায় অসম্ভব। একমাত্র ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমেই করোনা নির্মূল করা যাবে। আর এবার এই ব্যাপারে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে ভারত বায়োটেক। সব কিছু ঠিক-ঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারিতেই তারা বাজারে আনতে পারবে ‘কো-ভ্যাকসিন’। আর তা হলে অন্য জেলার মতো পশ্চিমবঙ্গেও এই ভ্যাকসিন আসবে ওই সময়ে। শুরু হতে পারে ‘গণটিকাকরণ’ কর্মসূচিও।
হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক সংস্থার এই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ‘কো-ভ্যাকসিন’-এর প্রথম পর্বের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল গত জুলাই মাস থেকে। সেই ট্রায়াল সম্পূর্ণ রূপে সফলও হয়। এবার আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব এন্টেরিক এন্ড কলেরা ডিজিজের পরিচালক শান্তা দত্ত জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ভারতের ৫টি রাজ্যকে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও থাকবে।
সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৫টি রাজ্য থেকে অংশ নেবে প্রায় ১ লাখ মানুষ। এঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের শরীরেরও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। তবে আশা করা হচ্ছে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের মতো এই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালও সফলভাবে শেষ হবে। আর তা হলে আগামী বছরের জানুয়ারিতেই ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ইন্ডিয়া থেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার অনুমতি পেতে পারবে এই ভ্যাকসিন।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই পশ্চিমবঙ্গে ‘কো-ভ্যাকসিন’ গণহারে প্রয়োগ করা শুরু হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও জানুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের সম্ভাবনা থাকবে দিল্লি, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশে। তারপর ধাপে ধাপে অন্য রাজ্যগুলিতেও এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা শুরু হবে।