অলক্ষ্মীর পুজো দেওয়া হয় কালীপুজোর রাতে, কিন্তু কেন?

Advertisement

অলক্ষ্মীর পরিচয় আসলে কি? যদিও এ নিয়ে রয়েছে একাধিক উপাখ্যান। কোথাও উল্লেখ রয়েছে সমুদ্র মন্থনের সময় বাসুকি নাগের মুখ থেকে বের হওয়া কালকূট বিষ থেকে তার জন্ম। আবার কোথাও উল্লেখ রয়েছে ব্রহ্মার উজ্জ্বল মুখ থেকে লক্ষ্মীর জন্ম হওয়ার পূর্বে ব্রহ্মার পিঠের অংশ থেকে জন্ম হয় অলক্ষ্মীর। এখানে অলক্ষ্মীর জন্ম আগে হওয়ায় লক্ষ্মী তার কনিষ্ঠ বোন হিসাবে উল্লেখ পাওয়া যায়।


অলক্ষ্মীর পুজো দেওয়া হয় কালীপুজোর রাতে, কিন্তু কেন?

জনদর্পণ ডেস্ক : কথায় রয়েছে লক্ষ্মীর বিপরীত অলক্ষ্মী। যেখানে অলক্ষ্মী থাকবে, সেখানে থাকবে না লক্ষ্মী। হিন্দু শাস্ত্রানুযায়ী এই দেবী অমঙ্গল ও অশুভর প্রতীক। বলা হয়, যে গৃহে একবার অলক্ষ্মী প্রবেশ করে, সেখানে সুখ-শান্তি বলে কিছু থাকে না। সংসারে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। আর যতদিন না অলক্ষ্মী সেই গৃহ থেকে বিতারিত হয়, সে গৃহে লক্ষ্মীর পদচিহ্ন পড়ে না।

তাই যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি থেকে অলক্ষ্মীকে বিতারিত করে লক্ষ্মী প্রতিষ্ঠা করতে চাই ওই গৃহের গৃহকর্তা বা গৃহকর্ত্রী। কালীপুজো বা দীপাবলির সন্ধ্যা বা রাতে তাই অলক্ষ্মীকে গৃহ ছাড়া করতে তার বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। আসলে কালী অশুভ ও অমঙ্গল বিনাশের দেবী। তার এই বিশেষ পুজোর দিনকেই বেছে নেওয়া হয় অলক্ষ্মীকে গৃহ থেকে বিতারিত করতে।

হিন্দু রীতি অনুযায়ী গোবর দিয়ে বাঁ’হাতে নির্মাণ করা হয় অলক্ষ্মীর প্রতিমূর্তি। আর পিটুলি দিয়ে তৈরি করা হয় লক্ষ্মী, নারায়ণ ও কুবেরের মূর্তি। অলক্ষ্মীর পুজো অবশ্য গৃহের বাইরে দেওয়া হয়। তারপর মহিলারা সমবেতভাবে উচ্চারণ করেন, ‘অলক্ষ্মী বিদায় হোক, লক্ষ্মী আসুক ঘরে’।

কিন্তু এই অলক্ষ্মীর পরিচয় আসলে কি? যদিও এ নিয়ে রয়েছে একাধিক উপাখ্যান। কোথাও উল্লেখ রয়েছে সমুদ্র মন্থনের সময় বাসুকি নাগের মুখ থেকে বের হওয়া কালকূট বিষ থেকে তার জন্ম। আবার কোথাও উল্লেখ রয়েছে ব্রহ্মার উজ্জ্বল মুখ থেকে লক্ষ্মীর জন্ম হওয়ার পূর্বে ব্রহ্মার পিঠের অংশ থেকে জন্ম হয় অলক্ষ্মীর। এখানে অলক্ষ্মীর জন্ম আগে হওয়ায় লক্ষ্মী তার কনিষ্ঠ বোন হিসাবে উল্লেখ পাওয়া যায়।

তবে জন্ম যেভাবেই হোক, একাধিক হিন্দু শাস্ত্রে তাকে অশুভ ও অমঙ্গলের দেবী হিসাবেই মেনে নেওয়া হয়েছে। সেখানে অলক্ষ্মীর রূপ বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার দেহ শুষ্ক, মুখ কুঞ্চিত ও চোখ উজ্জ্বল। গাধা তার বাহন। দেবী লক্ষ্মীকে বরাবরই ঈর্ষা করে অলক্ষ্মী। কারণ নারায়ণের মতো তার কোনও স্বামী নেই।

তবে কথিত রয়েছে, একবার উদ্দালক মুনির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু অলক্ষ্মী তার সঙ্গে সংসার করতে অস্বীকার করে। উদ্দালক মুনি তখন অলক্ষ্মীকে ত্যাগ করে চলে যায়। আবার পদ্মপুরাণে উল্লেখ রয়েছে কলি হল তার স্বামী। আর মন্থন ও মন্থি নামে দুটি ছেলে-মেয়েও রয়েছে তাদের।

Advertisement
Previous articleকালীর মহিমা : পঞ্চমুণ্ডির আসনে সিদ্ধিলাভের সময় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল নিরিশা কালীর
Next articleকালীপুজো পরিক্রমা ২০২১ : আমোদপুর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল (ভিডিও সহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here