অবশেষে ‘লকডাউন’ রাজ্য ২৭ মার্চ পর্যন্ত, ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রেল

Advertisement
জনদর্পণ ডেস্ক : ১৯ মার্চ সন্ধ্যা ৮টায় জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেছিলেন, করোনা সংক্রমণ আটকাতে ২২ মার্চ ‘জনতা-কারফিউ’ পালন করার। অর্থাৎ ওই দিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা দেশবাসীকে ঘর বন্দি থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর এই ২২ মার্চেই কেন্দ্র সরকার দেশের ৭৫টি জেলাকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ‘লকডাউন’ করার প্রস্তাব দিল। ওই তারিখ পর্যন্ত বন্ধ করে দিল সমস্ত যাত্রীবাহী রেল ও মেট্রো পরিষেবা।
5
২২ মার্চ জনশূন্য সিউড়ির জনপথ (ছবি : সোমনাথ মুখোপাধ্যায়)
     এদিন অর্থাৎ ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী সমগ্র দেশ জুড়েই পালিত হল ‘জনতা-কারফিউ’। এলাকার রাস্তাগুলি ছিল একেবারেই জনশূন্য। হাট-বাজার ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে কাউকেই তেমন বেরোতে দেখা যায়নি। যোগাযোগের সমস্ত যানবাহনও বন্ধ ছিল এদিন। কিছু সরকারি বাস চলতে দেখা গিয়েছিল শহরাঞ্চলগুলিতে। কিন্তু সেগুলিও ছিল প্রায় জনশূন্য। দেশের সমস্ত প্রান্তরেই এই একই ছবি ফুটে উঠেছে। শুধুমাত্র ওষুধের কিছু দোকান খোলা ছিল এদিন। কিন্তু সেখানেও ছিল একদমই মনুষ্যবিহীন।
6
২২ মার্চ আমোদপুরের জনশূন্য জনপথ (ছবি : সজয় পাল)
     এদিন বিশেষ প্রয়োজনে পথে বেরোনো পথচারীদের অনেককেই তাই বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বনধ্’-এর দিনেও পথ-ঘাট বা হাট-বাজার এমনভাবে জনশূন্য হতে দেখা যায় না, যা এদিন হল।
     তারপর বিকাল ৫টায় দেশের জনতাকে নিজের বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে ঘণ্টা, শঙ্খ, হাততালি বাজিয়ে সেই সমস্ত মানুষদের ধন্যবাদ জানাতে দেখা গেল, যাঁরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবা করে চলেছে এতদিন।
1
২২ মার্চ জনশূন্য আমোদপুর রেল স্টেশন (ছবি : সুজয় ঘোষাল)
     এদিকে ২২ মার্চ ‘জনতা-কারফিউ’ চলার সময়েই কেন্দ্র সরকার দেশের ৭৫টি জেলাকে ‘লকডাউন’ করার প্রস্তাব দিল। এই জেলাগুলিতেই করোনায় আক্রান্ত রোগী নিশ্চিত হয়েছে। তবে প্রস্তাবে এও বলা হয়েছে, ‘লকডাউন’ করতে রাজ্যগুলি প্রয়োজনে নিজেদের জেলার সংখ্যা বাড়াতেও পারে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী ২২ মার্চ মধ্যরাত থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত যাত্রীবাহী ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রীবাহী ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকলেও চালু থাকবে মালবাহী ট্রেনগুলি।
4
২২ মার্চ সিউড়ি শহরের জনশূন্য বাস (ছবি : সোমনাথ মুখোপাধ্যায়)
     এই একই দিনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জনপদগুলিকেই ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে দিল। এই ‘লকডাউন’ থাকবে ২৩ মার্চ বিকাল ৫টা থেকে ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত। (তবে এখানে ‘লকডাউন’ বলতে বোঝানো হয়েছে ‘কমপ্লিট সেফটি রেস্ট্রিকশন’)
2
২২ মার্চ লাভপুরের জনশূন্য জনপথ (ছবি : গৌর গোপাল পাল)
     এই সময়ের মধ্যে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। বন্ধ থাকবে সমস্ত গণপরিবহণ ব্যবস্থা (বাস, ট্যাক্সি, অটো, টোটো প্রভৃতি)। বন্ধ রাখতে হবে সমস্ত ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, অফিসগুলিকেও। তবে খোলা রাখতে পারবে মুদিখানা, সবজির দোকান, ওষুধের দোকান, গ্যাসের দোকান, পেট্রোলপাম্প, জ্বালানি তেলের দোকান, দুধের দোকান। চালু থাকবে ব্যাঙ্ক, এটিএম, আদালত, স্বাস্থ্য পরিষেবা। এছাড়াও ৭ জনের বেশি জনসমাগম করতে নিষেধও করা হয়েছে এই ‘লকডাউন’-এ।
3
২২ মার্চ বোলপুরের জনশূন্য জনপথ (ছবি : রঞ্জন সরকার)
     শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার) এখনও বিশ্ব জুড়ে এই কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৩২ হাজার ১৩৪ জনে পৌঁছে গিয়েছে। তার মধ্যে মারা গিয়েছে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন। ভারতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এখনও পর্যন্ত ৩৯১ জন। তার মধ্যে মারা গিয়েছে ৭ জন।

  • All Rights Reserved
Advertisement
Previous articleপ্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও চলছে করোনা সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার
Next articleবাজারে জিনিস কেনার ধুম, বিকাল ৫টার পরই ‘লকডাউন’ রাজ্য

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here