এমনিতেই দক্ষিণ আফ্রিকান এই পেঙ্গুইন প্রজাতিটি বিলুপ্তপ্রায় পেঙ্গুইনের মধ্যে অগ্রগণ্য। এক সময়ে ডায়ার দ্বীপটি ছিল এই জাতের পেঙ্গুইনের সবচেয়ে বড়ো কলোনি। ৫০ বছর আগেও সেখানে ২৫ হাজারের উপর পেঙ্গুইন দম্পতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই কলোনি এখন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। খাদ্যাভাব, জলদূষণ, পর্যটকদের মাত্রাতিরিক্ত আগমন এই বিলুপ্তির অন্যতম কারণ। |

অনলাইন পেপার : দূর থেকে ওদের দেখলে মনে হবে, যেন একদল বাচ্চা সারাদিন খেলে বেড়াচ্ছে বরফের বুকে। বুক আর পেট ধবধবে সাদা। আর পিঠের দিকটা কালো বা নীলচে কালো। সময়ে সময়ে তারা দু-পায়ে ভর দিয়ে অতি দ্রুত দৌড়ে যায় এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। তাড়িয়ে মাছ শিকার করতেও বেশ পটু এরা। আর এই মাছই এদের একমাত্র আহার্য সামগ্রী।
অ্যান্টার্কটিকার কাছাকাছি বরফাচ্ছন্ন নির্জন অঞ্চলগুলিতে এই পেঙ্গুইনদের বসতি সবচেয়ে বেশি। দল বেধেই এরা মূলত কলোনি গড়ে তোলে। অ্যান্টার্কটিকার প্রবল শীতকেও এরা যেন বশে নিয়ে এসেছে। তবে আজ বিলুপ্তির অতি কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে তারা।
তার থেকেও বেশি বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে ‘দক্ষিণ আফ্রিকান পেঙ্গুইন’। পেঙ্গুইন যে শুধুমাত্র অ্যান্টার্কটিকার আশেপাশের অঞ্চলগুলিতেই দেখা মেলে, এমনটি নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্তরীপগুলিতেও পেঙ্গুইনের উপস্থিতি রয়েছে। যদিও এই জাতের পেঙ্গুইন তুলনামূলক অন্যদের থেকে অনেকটাই ছোটো।
এবার এই বিলুপ্তপ্রায় দক্ষিণ আফ্রিকান পেঙ্গুইনদেরই আক্রমণ করে বসল আর এক বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী, ‘অন্তরীপের মৌমাছি’। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরের একটি কাছাকাছির সমুদ্র সৈকত থেকে অন্তত ৬৩টি এই জাতের পেঙ্গুইনের মৃত দেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় তাদের শরীরে একাধিক মৌমাছির কামড়ের দাগ মিলেছে। এছাড়া তাদের শরীরে অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এমনিতেই দক্ষিণ আফ্রিকান এই পেঙ্গুইন প্রজাতিটি বিলুপ্তপ্রায় পেঙ্গুইনের মধ্যে অগ্রগণ্য। এক সময়ে ডায়ার দ্বীপটি ছিল এই জাতের পেঙ্গুইনের সবচেয়ে বড়ো কলোনি। ৫০ বছর আগেও সেখানে ২৫ হাজারের উপর পেঙ্গুইন দম্পতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই কলোনি এখন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। খাদ্যাভাব, জলদূষণ, পর্যটকদের মাত্রাতিরিক্ত আগমন এই বিলুপ্তির অন্যতম কারণ। এখন দক্ষিণ আফ্রিকার ২৭টি পেঙ্গুইন কলোনির মধ্যে মাত্র কয়েকটিই কোনও রকমে টিকে রয়েছে।
তবে কি কারণে অন্তরীপের মৌমাছি পেঙ্গুইনদের আক্রমণ করেছে, সেব্যাপারে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে মেরিন বায়োলজিস্ট ড. অ্যালিসন কোক ধারণা করছেন, যেহেতু বিরক্ত না হলে মৌমাছিরা সচরাচর আক্রমণ বা কামড়ায় না। কোনও কারণে হয়তো তাদের চাক বা কলোনিতে আঘাত লেগেছিল। তাই বিরক্ত হয়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং পথে পেঙ্গুইনদের পেয়ে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। যদিও এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা।